BRANCH POST OFFICE (শাখা ডাকঘর)এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট


BRANCH POST OFFICE (শাখা ডাকঘর)এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
~~~~~~~~~~~~~~~~~
আই হ্যামিলটন লিখেছিলেন An outline of the postal history and practice with a history of post office in India(1910) । এই বইতে এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল (এখন যেটাGDS)ব্যবস্থা সম্পর্কে কিছু লেখা হয়নি।The post office in india and its story(1921) লিখেছিলেন সেসময়ের ডাইরেক্টর জেনারেল জিওফ্রে ক্লার্ক। তাতেও এই দিকটিতে কোন আলোকপাত করা হয়নি। শুধু বলা হয়েছিল যে ছোট ছোট এলাকায় যেখানে সাব পোস্ট অফিসের কোনো প্রয়োজন নেই সেখানে ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিস খোলা হত। সেখানে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হতো তাদেরই যাদের আয়ের অন্য উৎস আছে।
      সবচেয়ে আগে যে ব্যবস্থাটা গড়ে উঠেছিল তা হল ডিস্ট্রিক্ট পোষ্টাল সিস্টেম। এগুলি প্রচলিত ছিল প্রত‍্যেক জেলা সদর, থানা ও কর সংগ্ৰহের কেন্দ্রগুলির মধ্যে যোগাযোগ রাখার জন্য। সরকারি চিঠিপত্রের সাথে সাধারণ মানুষের চিঠিপত্র আদান- প্রদান হত। extra departmental system গড়ে উঠেছিল এই ব‍্যবস্থার মধ্যে। 1837 সালে গড়ে ওঠে imperial post। এই ব‍্যবস্থাটি যুক্ত হয় ডাক চলাচলের প্রধান প্রধান রুট এবং বড় বড় ডাকঘরের মধ্যে সংযোগ রক্ষার কাজে। ডিস্ট্রিক্ট পোষ্টাল সিস্টেম যুক্ত হয় গ্ৰামীণ ডাকব‍্যবস্থার সাথে। 1906 সালে ডিষ্ট্রিক্ট পোস্ট অবলুপ্ত হয় এবং ইমপেরিয়াল পোস্ট প্রসারিত হতে থাকে।
       1866-67 সালের বার্ষিক রিপোর্টে উল্লেখ পাওয়া যায় যে ঐ বছর ডাকবিভাগের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিস স্থাপন ডাক ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে। পরের বছরের রিপোর্টে বলা হয় যে নতুন গ্রামীন ডাকঘর গুলির আয় যেহেতু পর্যাপ্ত নয় সেজন্য এইসব ডাকঘরের দায়িত্ব কোন স্কুল শিক্ষক কিংবা কোন দোকানদারের হাতে কিংবা কোন প্রভাবশালী ব্যক্তির হাতে দেওয়া হতো যাদের পর্যাপ্ত আয়ের অন্য উৎস আছে আবার পেনশনভোগীদেরও BRANCH POST OFFICE র দায়িত্ব দেওয়া আরম্ভ হয়। এদের এজেন্সি আখ্যা দেওয়া হয়।
      প্রথমদিকে ব্রাঞ্চ অফিসে শুধুমাত্র ব্রাঞ্চ পোস্টমাস্টার নিয়োগ করা হতো। তারাই নামমাত্র ভাতার বিনিময়ে চিঠি বিলি ও ডাক আদান প্রদানের ব্যবস্থা করত, কোন কর্মচারী নিয়োগ করা হতো না। 1928-29 সালের বার্ষিক রিপোর্টে প্রথম 17 জন এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল ডেলিভারি এজেন্ট এর(NOW AS ABPM) উল্লেখ পাওয়া যায়। 1926 সাল হতে ওই নতুন ব্যবস্থা লাগু হয়েছিল।
         1929 সাল নাগাদ পুঁজিবাদী দুনিয়ায় গভীর সংকট নেমে আসে। ঔপনিবেশিক দেশগুলিতে তার ব্যাপক প্রভাব পড়ে। ভারতবর্ষও বাদ ছিল না। ভারত সরকারের খরচ কমানোর উপায় বের করার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ সরকার একটি কমিটি নিয়োগ করে যা জাহাঙ্গীর কমিটি নামে পরিচিত। জাহাঙ্গীর কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল ব্যবস্থার ব্যাপক প্রসার ঘটে।
         বস্তুতপক্ষে আর্থিক পরিস্থিতির চাপ সস্তায় ডাক ব্যবস্থা প্রসাবের রাস্তা খুলে দিয়েছিল যা স্বাধীনতার পরেও দেশের সরকার অনুসরণ করেছে। যত ধরনের বিভাগীয় পদ ছিল তার অনুরূপ এক্সট্রা ডিপার্টমেন্টাল পদ সৃষ্টি করা হয় জাহাঙ্গীর কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে।
          শিক্ষার প্রসার ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির কারণে ডাক ব্যবস্থার সম্প্রসারণ এর চাহিদা বৃদ্ধি করেছিল। কিন্তু ডাকঘরগুলির আয়স্তর কম থাকার কারণে তাতে বাধা সৃষ্টি হচ্ছিল। ফলে গ্রামে গ্রামে ডাক বিলির দিন বৃদ্ধি ও অন্যান্য সুবিধা বৃদ্ধি করার উদ্যোগ শুরু হয়। ডাকঘরের সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগও ছিল। দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা কালে কুড়ি হাজার ডাকঘর বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এর সিংহ ভাগই ছিল শাখা ডাকঘর বা EXTRA DEPARTMENTAL OFFICE । ডাক ব্যবস্থার সুবিধা গ্রহণে মানুষের চাহিদা মেটানোর তাগিদ থেকে ওই বৃদ্ধি হলেও মূল জায়গাটি ছিল ডাক ব্যবস্থা মানুষের সমাজ জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে পরিণতি লাভ করেছিল।
https://aipeuburdwan.blogspot.com

Post a Comment

0 Comments