DEB KUMAR CHATTOPADHYAY
DIVISIONAL SECRETARY
AIPEU GR- C, BURDWAN
************************
আপনার সম্বন্ধে এলোমেলো লেখা ছাড়া আমার উপায় নেই কারণ দেবুদা(কমরেড দেবকুমার চট্টোপাধ্যায়)র সাথে আমার পরিচয়ের বৃত্ত সামান্য। টুকরো টুকরো মুলাকাত আর ঘটনায় সম্পৃক্ত হয়ে দেবুদা আমাদের মজ্জায় মজ্জায় অবস্থান করছেন। AIPEU GR C ক্যাডারে বর্ধমান বিভাগে অনেকেই দক্ষতার সাথে দায়িত্ব সামলেছেন যেমন অশোক দা, লক্ষ্মী দা প্রভৃতি ব্যাক্তিত্ব। বর্ধমানের অন্যতম প্রবাদপ্রতিম নেতৃত্ব কমরেড সমীর বিশ্বাস দেবু দাকে GOOD BOY বলে ডাকতেন। তৎকালীন সময়ে দেবুদা ও পার্থ দা(পার্থ ভট্টাচার্য্য) একই সাথে ডিভিশন অফিসে কাজ করতেন। এমন সময় একটা কথা বহুলাংশে প্রচলিত হতে থাকে যে দেবুদা ও পার্থ দা নাকি প্রশাসনের চামচা। দেবুদা তখন বলতেন-" ধৈর্য্য ধরো,সময় সঠিক কথা বলবে"।
হ্যাঁ দেবুদা আজ সেই সময় যে সঠিক কথা বলছে তাইতো লিখতে বাধ্য হচ্ছি। যে পার্থ দার বাড়িতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আক্রমণ করা হয়েছিলো সেই পার্থ দা আজও নিজের আদর্শের প্রতি অবিচল আস্থা প্রদর্শন করে চলেছেন। সংগঠন পরিচালনা করতে প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলতে হবে আবার অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদও করতে হবে, দেখতে হবে প্রশাসনকে যেন কোনভাবে ব্যক্তিস্বার্থে বা সংগঠনের ক্ষতিকর স্বার্থে ব্যবহার করা না হয়।
খুব সম্ভবত 2014-15 সাল দেবুদা বর্ধমান বিভাগে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন,সদ্য ঘটে যাওয়া পট পরিবর্তনের পর সব টালমাটাল অবস্থা। ক্ষুদ্র ব্যাক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার উন্মত্ত খেলায় কর্মচারীরা অবতীর্ণ হয়েছেন, প্রশাসন আমাদের বিপক্ষে অবস্থান করছে, ব্যাক্তিগত আক্রমণ শাণিত হচ্ছে এসব বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও আমাদের নেতৃত্ব সংগঠক দের ঐক্যবদ্ধ রাখতে সফল হয়েছিলেন, এটা অবশ্যই সম্ভব হয়েছিল আমাদের সংগঠক দের একটা বিপুল অংশের বলিষ্ঠতার কারণে।
ধীরে ধীরে দেবুদার পথ চলা শুরু তিনি কখনোই ক্যাডারভিত্তিক সংগঠন পরিচালনা করেন না, তিনি বলেন বর্ধমানে একটাই সংগঠন NFPE GROUP OF UNION, বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মচারীদের সমস্যা তিনি সমান দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে গুরুত্ব দেন। তিনি আসার পর থেকেই তরুণ প্রজন্মকে সামনে নিয়ে আসার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বিভিন্ন দায়িত্বভার বন্টন করে দিচ্ছেন তাদের মধ্যে, গুরুত্ব দিচ্ছেন প্রবীণ-নবীন সকলকেই এবং সংগঠনে থেকেও এতদিন যারা নেপথ্যে ছিলেন তাদেরকে সামনে এনে নতুন ইতিহাস রচনার চেষ্টা করে চলেছেন। নতুন নতুন আঙ্গিকে শৈল্পিক সত্ত্বার মধ্য দিয়ে সংগঠনকে সৃজনশীল করে তুলছেন।বিভিন্ন উদ্ভাবনী শক্তির মধ্য দিয়ে সংগঠনকে সমৃদ্ধশালী করার চেষ্টা করে চলেছেন সাধারণ মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়ার চেষ্টা করে চলেছেন। ফলস্বরূপ আমরা দেখেছি এই সময়কালের মধ্যে যখন কোভিড মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মানুষ খেতে পাচ্ছে না তখন তার নেতৃত্বে NFPE BURDWAN বহু মানুষের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে বিভিন্ন প্রান্তে, চারদিন ধরে কমিউনিটি কিচেন পরিচালনা করা হয়েছে। এছাড়াও সংগঠনের সদস্য/ সদস্যা দের কৃতি সন্তান-সন্ততির জন্য অভ্যর্থনার ব্যবস্থা করেছেন। স্বল্প বেতনভুক্ত GDS ও PART TIME কর্মচারীদের গুরুতর অসুস্থ তার ক্ষেত্রেও সংগঠন সাধ্যমত পাশে দাঁড়িয়েছে। দপ্তরের দক্ষ কর্মী হিসেবেও আপনি বর্ধমান বিভাগে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা লাভ করেছেন। আপনার শিক্ষা, চেতনা, ভাবধারা আমাদের সমৃদ্ধ করে। আপনি প্রতিনিয়ত বলেন আগে দপ্তর পরে সংগঠন, দপ্তর থাকলে সংগঠন থাকবে আপনার এই দীক্ষায় দীক্ষিত হবার স্বপ্ন দেখি আমরা।
পেশায় কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী হয়ে একাধারে কর্মচারীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে দীপ্ত কন্ঠে অধিকার আদায় করেন অন্যদিকে বৃহত্তর মানুষের স্বার্থে রাস্তায় নামেন। অজানাকে জানার অফুরন্ত ইচ্ছাশক্তি আপনার শিরায় শিরায় শিরায়। যেকোন বিষয়ে আপনার সমালোচনা করার ভঙ্গিটা এত মধুর মিষ্টি যে কমরেডরা তা আন্তরিক ভাবে গ্রহণ করেন। আপনার উপস্থিতি আমাদের শারীরিক ও মানসিক জোর মজবুত করতে উৎসাহিত করে। একদিকে কর্মচারীদের জন্য কাজ করা অন্যদিকে বৃহৎ অংশের মানুষের জন্য কাজ করা দেখে মনে পড়ে যায় লেনিন-র সেই কথা- " বৃহত্তর মানুষের স্বার্থবাহী নীতিই হলো রাজনীতি"। কমরেড মাও সে তুং এর ভাষায় যদি বলতে হয়-" জনগণই হচ্ছে ভগবান। তাই জনগণের মন গলাতে পারলে, বিরামহীন ভাবে একযোগে উঠে দাঁড়াতে পারলে, একসাথে মিলে খুঁড়তে পারলে সাম্রাজ্যবাদ ও সামন্ততন্ত্রের পাহাড় উপড়ে ফেলা যায়। যার প্রমাণ1949 সালেই পাওয়া গেছে"। জনগণ ও সংগঠনের কাজ করার মধ্যে দিয়ে আপনি ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এই কামনা করছি।
https://aipeuburdwan.blogspot.com
0 Comments