সংগঠন যখন অসহায় মানুষের কাজে লিপ্ত
************************
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা উপন্যাসের এক জায়গায় অমিত রায় বলছেন"ইতিহাসে কোনখানে লেখে না যে, হাতের কাছে বর্ষাতি ছিল না ব'লে বাদলের দিনে প্রেমিক তার প্রিয়ার কাছে যাওয়া মুলতবি রেখেছে; বরঞ্চ লেখা আছে সাঁতার দিয়ে অগাধ জল পার হওয়ার কথা"।
কোথাও যাওয়ার ইচ্ছা থাকলে বা কিছু কাজ করার ইচ্ছা থাকলে অগাধ জলও বাধা হতে পারে না।
কথিত আছে বিদ্যাসাগরও মায়ের ডাকে উত্তাল নদী পার হয়েছিলেন। ইতিহাসের পাতায় পাতায় এই রকম অজস্র উদাহরণ আছে। সদিচ্ছাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রেক্ষাপটে ALL INDIA POSTAL EMPLOYEES UNION BURWAN DIVISION মানুষের কাজে লিপ্ত হওয়ার অঙ্গীকার গ্ৰহণ করে।
সমগ্ৰ পৃথিবীর মানবজাতি অস্তিত্বের সঙ্গে লড়াই করে চলেছে। মানবতা বিপন্ন। আর এই মহামারী সৃষ্টিকারী কোভিড কে পরাস্ত করতে লক ডাউনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছে সমগ্ৰ পৃথিবী। ভারতবর্ষ ও তার ব্যাতিক্রম নয়। এই পর্যায়ে আমরা লক্ষ্য করেছি সমাজের একটা অংশের মানুষ যাঁরা "দিন আনে দিন খায়" তাঁদের কাছে জীবন যন্ত্রণা দূর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ঠিক এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আমরা ডাক কর্মচারী রা আমাদের আত্মসীমার মধ্যে আবদ্ধ না থেকে সামাজিক উপায়ে মানুষের পাশে থাকার সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করেছিলাম।
রাস্তায় অভুক্ত মানুষের শুকনো মুখ।শ্রমিকরা আটকে আছে কাজ নেই। কৃষক ফসলের দাম পাচ্ছে না। ক্ষেত মজুর কাজ পাচ্ছে না। ক্ষুধার্ত পেট লক ডাউন মানে না তাই মুখগুলো আজ শুকনো। স্বাভাবিক কারণেই এই সমস্ত মানুষদের পাশে থাকার সংগ্ৰাম শুরু হয়েছিল সারা ভারত ডাক কর্মচারী সংগঠনের নেতৃত্বে।
এই সংগ্ৰামে গতবছর আমরা সর্বমোট 600 দুঃস্থ পরিবারের হাতে ত্রাণসামগ্রী তুলে দিতে পেরেছিলাম। এই কর্মসূচি সংগঠিত হয়েছিল সমগ্ৰ বর্ধমান বিভাগ জুড়ে, বর্ধমান শহরের ভাতছালা, বড়নীলপুর, ছোটনীলপুর এবং গোলাপবাগে এছাড়াও রসুলপুর, কাটোয়া, কালনায় ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি পালিত হয়েছিল। পরবর্তী ক্ষেত্রে নীলপুর পিপলস কিচেনে 4 দিন ধরে প্রায় 800 মানুষের মধ্যে রান্না করা খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছিল। এই বৃহৎ কর্মযজ্ঞ সম্ভব হয়েছিল আমাদের সদস্যদের দায়িত্বশীল ভূমিকার উপর নির্ভর করে। শুধু বর্ধমান নয় সমগ্ৰ পশ্চিমবঙ্গ সার্কেল জুড়েই বিভিন্ন প্রান্তে N.F.P.E র লাল সৈনিকেরা পৌঁছে গেছে মানুষের কাছে এছাড়াও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগেও মানুষের পাশে থাকার দৃষ্টান্ত আছে যা আমফানের ক্ষেত্রেও আমরা দেখেছি এবছর যশ নামক প্রাকৃতিক বিপর্যয়েও যা বর্তমান। আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা ডাককর্মচারী হিসেবে শুধুমাত্র নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়েই লড়াই করা নয় মানুষের কাজে লিপ্ত হবার মধ্যে দিয়ে নিজেদের দাবি গুলোকে সাধারণ মানুষের কাছে উপস্থাপিত করে তাদের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সহাবস্থানের মধ্যে দিয়ে বৃহত্তর লড়াই আন্দোলনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়।
..........................................................
https://aipeuburdwan.blogspot.com
0 Comments