প্রশাসন ও সংগঠন



প্রশাসন ও সংগঠন
******************
1960 সালের ধর্মঘটের যথেষ্ট আগে, বলা যেতে পারে যে দেশের স্বাধীনতার পর থেকেই আলোচনার মাধ্যমে শ্রমবিরোধ মীমাংসার কোন স্থায়ী সংস্থা গঠনের কথা বারবার সামনে এসেছে।1957 সালে বিষয়টি আরও গুরুত্ব পায়। চাহিদাটা ছিল এরকম যে দপ্তরের উর্দ্ধতন ও অধঃস্তন কর্মচারীর আলোচনা এমন মানসিকতা থেকে নয় একই কমিটির সদস্যদের মধ্যে আলোচনার উপলব্ধি নিয়ে কাজ করা। ব্রিটেনের হুইটলি কাউন্সিল এ ধরনের একটি সংস্থা যেখানে সরকারপক্ষ এবং কর্মচারী প্রতিনিধি উভয়ে সম মর্যাদা সম্পন্ন। এ রকমই ভেবেছিলেন কর্মচারীরা। 
           দ্বিতীয় বেতন কমিশনের রিপোর্ট এ সম্পর্কে বলেছিল," an adequate machinery for negotiation redress of grievances and settlement of disputes" তাদের সুপারিশ ছিল, "The different branches of civil service would be brought together and the various grades obliged,as a matter of practical necessity, to consider the problems and needs of one another,and this might, in course of time,develop among the employees the feeling of belonging to a single public service". এ প্রসঙ্গে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর বেতার ভাষণের একটা অংশ উল্লেখ করা যেতে পারে। 5 ই জুন 1957 তারিখ জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে উল্লেখ করা হয়েছিল," আমাদের উচিত পারস্পরিক আলোচনার এমন এক ব্যবস্থা যাতে দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা যায়। আমি আশা করি সে ব্যবস্থার মধ্যে সমস্যার সাথে সংশ্লিষ্টদের সাধারণ বোঝাপড়া, সমান অবস্থান, সমস্যা ও সমাধানের সমান ভুক্তভোগী হিসেবে কাজ করবে এবং উচ্চতর অধঃস্তন কর্মচারী কিংবা বিবাদমান দুটি অংশ হিসেবে নয়।"
          কেন্দ্রীয় সরকারের যুগ্ম আলোচনা পর্ষদ(JCM) সংক্রান্ত সার্কুলার 5ই অক্টোবর, 1963 তারিখ প্রচারিত হয় এবং সংগঠনগুলির মতামত চাওয়া হয়। সেই খসড়ার মুখবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছিল:" এই পর্ষদ গঠনের লক্ষ্য হল সরকার ও কর্মচারী সাধারণের মধ্যে মধুর সম্পর্ক স্থাপন এবং সরকারি পরিষেবার দক্ষতা বৃদ্ধি"। এ সম্পর্কে ব্রিটেনে যে ব্যবস্থা চালু আছে বলা হয়েছে তা হচ্ছে " কর্মচারী প্রতিনিধিরা যখন কোন ডেপুটেশন দেয় তখন তারা সরকারের প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে এমন নয়, তারা আলোচনা করে একই কমিটির দু'জন প্রতিনিধি হিসেবে সাধারণ সমস্যা সমাধানের মানসিকতা নিয়ে। সেই আলোচনা সভা ছোট বা বড়,বিধিবদ্ধ বা বিধিবদ্ধ নয়- যাই হোক না কেন, সেটি কর্মচারী প্রতিনিধি ও সরকারি প্রতিনিধির যুক্ত সভা হিসাবে বিবেচিত হয়"।

কলমে - অশোক চ্যাটার্জী 
সম্পাদক, পেনশনার্স সংগঠন, বর্ধমান বিভাগ।
https://aipeuburdwan.blogspot.com



Post a Comment

0 Comments